সাধারণ প্রচলিত দেবী বিপত্তারিণী দুর্গার ব্রতকথায় আমরা গো-মাংসের উল্লেখ পাই,কিন্তু জানেন কি ,আসল ব্রতকথা লুকিয়ে আপনাদের দেওয়া হয়েছে নতুন বানানো ব্রতকথা,যেখানে রয়েছে গোমাংসের উল্লেখ !
নমো নমো গজানন বিঘ্নবিনাশন।
নমো প্রভু মহাকায় মহেশ নন্দন।।
নমো নমো লম্বোদর নমো গণপতি।
মাতা যার আদ্যা শক্তি দেবী ভগবতী।।
বিপত্তারিণীর কথা করিব বর্ণন।
যে কথা শুনিলে হয় বিপদ খণ্ডন।।
হরিনামে মত্ত হয়ে সে নারদ ঋষি।
অকস্মাৎ উপনীত কৈলাশেতে আসি।।
মহাসুখে তথা বসি রহে হর-গৌরী।।
নারদ নোয়াল শির চরণে দোহারি।।
$ads={2}
মহাদেব স্মিতহাস্যে কহিলেন একি।
অসময়ে মুনিবরে কৈলাসেতে দেখি।।
করপুটে মহামুনি কহিলেন প্রভু।
জ্ঞান আহরণ হেতু আসি হেথা কভু।।
কোন ব্রত আচরিলে নারী থাকে সুখে।
সঙ্কট মাঝেতে তার থাকে বল বুকে।
মনস্কাম সিদ্ধ হেতু থাকে নাহি দু:খ।
বিপদে তরিয়ে যাবে পাবে মহাসুখ।।
নারীর বেদন হেরী আমি বিচলিত।
তাদের শান্তির পথ করুন নির্ণিত।।
শিব কহে হে নারদ ভাল জিজ্ঞাসিলে।
বিপত্তারিণী ব্রতে এই ফল মিলে।।
বিপত্তারিণী ব্রত পালে যেই নারী।
সর্ব দু:খ নাশ নিমিষেতে তারি।।
শঙ্করের কাছ হতে লভি নবজ্ঞান।
দেবর্ষি নদীতে যান করিবারে স্নান।।
মহামুনি যখন যাবেন নদীর নিকটে।
দেব কন্যাগণ বসে হেরে নদী তটে।।
ফুল দুর্বা বিল্বপত্র ভাসি আসে জলে।
ঋষিরে জিজ্ঞাসে তারা অতি কৌতুহলে।।
কহ মুনি প্রকাশিয়া কারণ ইহার।
কেন বা ভাসিয়া আসে পূজা উপচার।।
কোন দিন স্নানকালে এমত না দেখি।
আমরা বসিয়া হেথা সর্ব্বদা নিরখি।।
নারদ কহিল কেউ পূজিয়া তারিণী।
পূজা অন্তে ফুল দুর্বা ফেলে অনুমানি।।
কন্যাগণ দেবর্ষিকে করিয়া বেষ্টন।
শুনিতে ইচ্ছুক হন পূজার বিবরণ।।
পূর্বে কভু এই পূজা তারা শুনে নাই।
নারদে বেষ্টন তারা করিল যে তাই।।
তখন নারদ কহে কৈলাস বারতা।
কেমনে জানিতে পারে তারিণীর কথা।।
একথা নারদ যবে কৈলাসেতে ছিল।
পঞ্চদাসী গৌরি পাশে আসিয়া জুটিল।।
কি কারণে নাম তাঁর বিপত্তারিণী।
অভিলাষ হইয়াছে শুনিতে সে বাণী।।
মহাদেবপানে চাহি কহিলেন গৌরি।
শুনিতে তারিণী কথা ইচ্ছা যে পদ্মারি।।
বিপত্তারিণী কথা কহে পঞ্চানন।
পদ্মা তাহা যদি শুনেন তখন।।
সমুদ্র মন্থিল যবে সুর ও অসুর।
সহসা গরল তাহে উঠিল প্রচুর।।
কি হবে উপায় তার ভাবি দেবগণ।
শিবের সাহায্য মাগি লইল স্মরণ।।
দুর্গা বলিয়া মহাদেব সেই বিষ পানে।
কৃপা করি ধরামাঝে শান্তি ফিরে আনে।।
দুর্গা নামে মহাদেব রক্ষিল ধরাতে।
বিপত্তারিণী সবে কহিল দুর্গারে।।
গোষ্ঠে যাত্রাকালে দেবী যশোদা জননী।
কৃষ্ণের মঙ্গল চাহে হয়ে জোড় পাণি ।।
কালিয়ার বিষপূর্ণ ছিল কালিদহ।
রাখালেরা তথা যায় শ্রীদাম সহ।।
না জানিয়া খায় কবে সে বিষজল।
বিষের ক্রিয়ার দেহ হইল বিকল।।
দুর্গা নামে তেজো দৃপ্ত শ্রীকৃষ্ণ আসিয়া।
রক্ষিল সবারে নিজে কালীরে নাশিয়া।।
যখন যে ভাবে যার যে বিপদ আসে।
বিপত্তারিণী নামে সে সকলি নাশে।।
বিপদে সম্পদে কিংবা যে কোন সময়ে।
বিপত্তারিণী নাম রাখিও হৃদয়ে।।
ফলমুল ব্যঞ্জনাদি ত্রয়োদশ মত।
ব্রতান্তে বাঁধিবে রক্তডোর ত্রয়োদশযুত।।
এতদুরে ব্রতকথা হইল সমাপন।
বিপত্তারিনীর জয়কার করো সর্ব্বজন।।